চাই সচেতনতা!

Client Logo
  • গল্প লিখেছেনঃ  মোছাম্মৎ সাবিনা ইয়াছমিন
  • তারিখঃ 2017-04-20
  • ভিজিটঃ 1368
 
বাংলাদেশের হাওড়-বাওড় বেষ্টিত “এ” ক্যাটাগরি জেলা সুনামগঞ্জ। কিন্তু “এ” ক্যাটাগরি জেলা হলেও সুনামগঞ্জ একটি অনুন্নত জেলা। জেলার শিক্ষার হার মাত্র ৩৫%।  এছাড়া জেলার অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র। দারিদ্রতা আর নিরক্ষরতার ফলে জেলার অধিকাংশ মানুষ অসচেতন। আর অসচেতনতার ফলেই সমাজে ঘটে নানা রকম বিপত্তি। আপনি যদি সুনামগঞ্জ যান,  জেলায় খুব বড় কোন বাজার বা মোদির দোকান আপনার চোখে পড়বে না। জেলা  সদরে ছোট ছোট কিছু মোদির দোকান ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান রয়েছে। আর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অসচেতনতার ফলে অধিকাংশ দোকানেই মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য প্রতিনিয়ত বিক্রি হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, দরিদ্র ও অশিক্ষিত জনগণই না বুঝে এইসব মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ক্রয় করে।  ফলে, এইসব মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খেয়ে অনেকেই অসুস্থ হনআর সমাজের এইসব অসচেতন মানুষগুলোর মাঝে একটু সচেতনতা তৈরি করতে এবং সাধারণ জনগণকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায়  গত ০৯/০৮/২০১৬ খ্রিঃ তারিখ রোজ মঙ্গলবার  দুপুর ০১.৩০টায়  জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ এর নির্দেশে আদিষ্ট হয়ে সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মদনপুর নামক স্থানে কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানে আমি মোছাম্মৎ সাবিনা ইয়াছমিন (এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। এ সময় শামীম আহমদ নামক জনৈক ব্যাক্তির মোদির দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। তার দোকানে রক্ষিত বিভিন্ন পণ্য যাচাই করে দেখা হয় এবং  পরীক্ষান্তে  উক্ত দোকানে কতিপয় মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য খুঁজে পাওয়া যায়।  মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখার কারণে  উক্ত দোকানের মালিক জনাব শামীম আহমদ,  পিতা-শরীফ উদ্দিন আহমদ, বয়স- ২৪ বছর, ঠিকানাঃ গৌড় পাড়া, সুনামগঞ্জ সদর, সুনামগঞ্জ’কে “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯” এর ৫১  ধারা লঙ্গনের   অপরাধে =৩,০০০/= (তিন হাজার টাকা) জরিমানা করা হয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় সুনামগঞ্জ  জেলা মার্কেটিং অফিসার,  জনাব মোঃ আঃ খালেক  উপস্থিত  ছিলেন। শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে  এ সময়  মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধ এবং এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে বোঝানো হলে তিনি তার দোষ স্বীকার করেন  এবং প্রতিজ্ঞা করেন যে, ভবিষ্যতে তিনি আর  কখনো তার দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখবেন না বা বিক্রি করবেন না। এছাড়া  দোকানের আশেপাশে ভীড় করা উৎসুক জনতাকেও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ক্রয় না করতে/ মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে পণ্য ক্রয় করতে পরামর্শ দেয়া হয়। একই সাথে আরোও কয়েকটি দোকানে অভিযান চালানো হয়। যেসকল দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য পাওয়া যায়নি তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। মেয়াদউত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকানোর কাজে জড়িত  অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সাধারণ মানুষের হয়রানি বন্ধ করতে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ এর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আর আশার কথা হচ্ছে, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। ফলে সুনামগঞ্জের অনেক দোকানেই এখন মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখা হয় না/ বিক্রি করা হয় না। 

 প্রিন্ট