যে আইন শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ
- গল্প লিখেছেনঃ জেসমিন নাহার
- তারিখঃ 2017-04-20
- ভিজিটঃ 6076
জন্মের পর থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধই শিশুর একমাত্র পূর্ণাঙ্গ খাবার হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় পুষ্টিগুণ সে পেয়ে থাকে মায়ের দুধ থেকেই। ফলে শিশুর সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করতে জন্মের পর থেকেই সে যাতে শুধু মায়ের দুধ গ্রহণ করে,তা নিশ্চিতে উদ্যোগ রয়েছে সারা বিশ্বেই। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে “মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩" শীর্ষক সুস্পষ্ট আইন থাকলেও আইনটির বিষয়ে জানা নেই অধিকাংশ মানুষেরই। এর থেকে ব্যতিক্রম ছিলনা ঠাকুরগাঁও জেলা।উক্ত আইনের উপর ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বপ্রথম আমি মোবাইল কোর্ট করা শুরু করি। এরকম একটি মোবাইল কোর্টের ঘটনা নিম্নরূপঃ
গত ২৪-১১-১৬ তারিখে ঠাকুরগাঁও;জেলার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলাধীন চৌধুরী ভবন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে মধ্যহ্ন ৪.৪৫ ঘটিকায় মো: মাসুদ পিতা: সাফাতুল্লাহ, বয়স: ৪৫ বছর, ঠিকানাঃ চৌধুরী ভবন, ঠাকুরগাঁও সদর, ঠাকুরগাঁও কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের সময় হাতেনাতে ধৃত হন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জনাব মোঃ আখতার ফারুক ,নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক, ঠাকুরগাঁও, মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর ৪ধারায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এই যে, মো: মাসুদ, চৌধুরী ভবন, ঠাকুরগাঁও সদর, ঠাকুরগাঁও স্থানে মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য বা তা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি আমদানি, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, বিক্রয় বা বিতরণ করা অথবা এই সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন মুদ্রণ, প্রদর্শন, প্রচার বা প্রকাশ করার অপরাধ করে যা মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর ৪ ধারার লঙ্ঘন ও ১২ ধারায় দণ্ডনীয় অপরাধ।
উক্ত অপরাধ আমার কর্তৃক উদ্ঘাটিত হওয়ায় ঘটনাস্থল থেকে আসামিকে তৎক্ষণাৎ আটক কর, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯–এর ৬(১) ধারা মোতাবেক অপরাধ আমলে গ্রহণ করে ৭(১) ধারার বিধানমত আসাম মো: মাসুদ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করি । উক্ত অভিযোগ তাকে পড়ে শোনালে ও বুঝিয়ে দিলে তার দোষ স্বীকার করেন। উক্ত আইনের ৭(২) ধারা মোতাবেক অভিযুক্ত ব্যক্তির দোষ স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করি এবং তাকে ও উপস্থিত সাক্ষীদ্বয়ের স্বাক্ষর গ্রহণ করি। আসামি মো: মাসুদ দোষ স্বীকার করায় তাকে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এর ৭(২) ধারার বিধানমতেমাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর ১২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৩০০০ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১৫ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আসামি অর্থদণ্ড নগদ পরিশোধ করেন, যার রশিদ নম্বর-187998, তারিখ- ২৪-১১-১৬। আদায়কৃত অর্থ পরবর্তী কার্যদিবসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে চালানের মাধ্যমে জমা প্রদানের জন্য বেঞ্চ সহকারীকে বলা হয়।
পরবর্তীতে এই আইনের উপরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যহত থাকে। আমি আশা রাখি এর মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে।